ঢাকাশনিবার , ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

ইতিহাসের স্বাক্ষী দিচ্ছে শের-ই-বাংলা যাদুঘর

প্রতিবেদক
admin
ডিসেম্বর ২১, ২০২৪ ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ

হাসিবুর রহমান নবীন বরিশাল থেকে: বরিশালের বানারীপাড়ায় শের-ই-বাংলা স্মৃতি যাদুঘরটি ইতিহাসের স্বাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক এখানে আসেন। আসেন ইতিহাসবিদ, রাজনীতিবিদ, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাবিদসহ নানা পেশার মানুষ। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরাই আসেন বেশী। তবে তারা যে প্রত্যাশা নিয়ে আসেন তা অনেকটা পূরণ হয় না। এখানকার অবস্থা আরো সমৃদ্ধি হওয়া উচিত ছিলো। দূর থেকে যেভাবে শোনা যায় তার সাথে এখানকার তেমন মিল পাওয়া যায় না। তবুও অনেকে আসেন একজন দেশবরেণ্য রাজনীতিবিদের স্মৃতি রোমন্থন করতে ও তাঁর সম্পর্কে জানতে। গতকাল এ কথাগুলো বলছিলেন, পরিদর্শনে আসা ইতিহাসের শেকড় খোঁজা মানুষ হাবিবুর রহমান মামুন। জনাব মামুন ঢাকায় বসবাস করেন। তিনি বানারীপাড়ার চাখারে শেরে বাংলা স্মৃতি যাদুঘর দেখছিলেন। বেশ কিছুক্ষণ তার সাথে কথা হয়। তার কথার মধ্যে অনেকটা আক্ষেপের সুর ছিলো। তিনি বলেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, অবিসংবাদিত নেতা শের-ই-বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের স্মৃতি এটি। যা শেরে বাংলা স্মৃতি যাদুঘর নামে পরিচিত। এটি আরো সমৃদ্ধ থাকা দরকার। ১৯৮৩ সালে প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত¡াবধানে এ জাদুঘরটি চালু করা হয়। এটি দেখভাল করার জন্য জনবল নিয়োগ দেয়া হয়। যাদুঘরে ৫টি কক্ষ, ৩টি ডিসপ্লেরুম, অফিস, লাইব্রেরী, আপ্যায়ন রুমসহ একটি ডরমেটরি রয়েছে। প্রধান গেইটে রয়েছে রিসেপশন ও দর্শনার্থীদের টিকের ব্যবস্থা। যাদুঘরের টিকেট বিক্রেতার সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, যাদুঘরটি পরিদর্শন করতে হলে জনপ্রতি ১০ টাকা দিয়ে টিকেট নিতে হয়। তিনি আরো বলেন, সব ধরণের মানুষ এখানে আসেন। দৈনিক গড়ে ৫০ থেকে ১০০ জন পর্যন্ত আসেন। তবে নানা পার্বণে লোকের সমাগম হয় বেশি। যাদুঘরে শেরে বাংলার জীবন ও কর্মের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক ছবি রয়েছে। এছাড়াও যাদুঘরে জনাব হকের ব্যবহৃত নিদর্শনগুলোর মধ্যে রয়েছে আরাম কেদারা, কাঠের খাট, তোষক, আলনা, ড্রেসিংটেবিল, টুল, চেয়ারটেবিল, হাতের লাঠি, পানীয় জলের গøাসসহ অন্যান্য মালপত্র। একটি কুমিরের খোলস রয়েছে। একসময় জাদুঘরে রক্ষিত ছিল পুরাকীর্তির নানা নিদর্শন যা এখানে দেখা যায়নি। গ্রীষ্মকালে জাদুঘর সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। মাঝখানে দুপুর ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত আধ ঘন্টার জন্যে বন্ধ থাকে। শীতকালে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শীতকালেও দুপুর ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। শুক্রবারে জুম্মার নামাজের জন্যে সাড়ে বারোটা থেকে ২টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। রবিবার সাধারণ ছুটি এবং সোমবার অধাবেলা। এছাড়াও সরকারি কোন বিশেষ দিবসে জাদুঘর উন্মুক্ত থাকে। আগত অন্য এক কলেজ পড়–য়া দর্শনার্থী হাসিবুর রহমান নবীন বলেন, অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা শের-ই-বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হকের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ও কর্মময় জীবন সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে ও ধারণা দিতে এ যাদুঘরটি যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। তবে এ মহান নেতা সম্পর্কে আমরা আরো কিছু জানতে প্রত্যাশা করি। এযাবত বহুতল ভবন নির্মাণসহ জাদুঘরটিকে আরও সমৃদ্ধ করার কোন পদক্ষেপ দেখছি না। পরিদর্শনের সময় অনেকেই নানা প্রতিশ্রæতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়না। যাদুঘরটিকে আরো যুগোপযোগী করলে এবং মহান নেতার তথ্য, উপাত্ত সংগ্রহ করাসহ লোকবল, প্রচার-প্রচারণা বাড়ালে দর্শণার্থী পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। অন্যদিকে এ প্রজন্ম রাজনৈতিকভাবে হবে সমৃদ্ধ পাবে অনুপ্রেরণা। শের-ই-বাংলা ১৯৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর বরিশাল জেলার রাজপুরের সাতুরিয়া গ্রামে মামার বাড়ি জন্মগ্রহণ করেন। ২৭ এপ্রিল ১৯৬২ সালে ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর পিতা কাজী মুহম্মদ ওয়াজেদ মিয়ার জন্ম এই চাখার কাজী বাড়ি।

সর্বশেষ - জাতীয়